ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পৃথিবীর মধ্যে পুষ্টিকর হার্বও বলা হয়ে থাকে, শজনেপাতাকে

শজনেপাতাকে পৃথিবীর মধ্যে পুষ্টিকর হার্বও বলা হয়ে থাকে,পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান

বিনোদন ডেক্স
আপলোড সময় : ০৫-১০-২০২৩ ০১:৫৬:৫৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৫-১০-২০২৩ ০১:৫৬:৫৭ অপরাহ্ন
শজনেপাতাকে পৃথিবীর মধ্যে পুষ্টিকর হার্বও বলা হয়ে থাকে,পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান ফাইল ছবি : শজনেপাতা
গ্রাম থেকে শহর, প্রায় সব মানুষের কাছে শজনে খুব পরিচিত নাম। এর ডাঁটা সবজি হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। আবার এর পাতাও সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নানা মাধ্যমে এই শজনেপাতার গুঁড়া উপাদানটি ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে শজনেপাতার গুঁড়া ইংরেজি শব্দ ‘মরিঙ্গা পাউডার’ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে

মূলত বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও বলবর্ধক হিসেবে এর গুঁড়া খাওয়ার হার বেড়ে চলছে। খরাসহিষ্ণু ও গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের এই উদ্ভিদ কতটুকু উপকারী, সে ব্যাপারে একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান। এবার তার ভাষ্য অনুযায়ী শজনেপাতার গুঁড়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
 
সুপারফুড : শজনেপাতাকে অলৌকিক পাতাও বলা হয়। পৃথিবীর মধ্যে পুষ্টিকর হার্বও বলা হয়ে থাকে এই পাতাকে। এ কারণেই গবেষকরা এই পাতাকে ‘নিউট্রিশনস সুপার ফুড’ আখ্যা দিয়েছেন। আর এর গাছকে বলা হয় মিরাকল ট্রি। কমলার থেকে সাত গুণ বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি এবং দুই গুণ বেশি প্রোটিন থাকে প্রতি গ্রাম শজনেপাতায়।
 
এছাড়া গাজরের থেকে চার গুণ বেশি ভিটামিন এ, কলার থেকে তিন গুণ বেশি পটাশিয়াম রয়েছে। যা অন্ধত্ব, রক্তাল্পতাসহ শরীরের ভিটামিন ঘাটতিজনিত নানা রোগের অস্ত্র হিসেবে কাজ করে। আর এর পুষ্টিগুণ দুধের কাছাকাছি হওয়ায় দুধের বিকল্প হিসেবে এক চামচ শজনেপাতার গুঁড়া খাওয়া যেতে পারে।
 
শজনেপাতায় রয়েছে জিংক এবং পালংশাকের থেকে তিন গুণ বেশি পরিমাণ আয়রণ। যা অ্যানিমিয়া দূর করতে ভূমিকা রাখে। শজনে শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণসহ প্রায় ২০ শতাংশ প্রোটিন সরবরাহ করে। এই প্রোটিনের গাঠনিক একক হচ্ছে অ্যামাইনো অ্যাসিড। যা শরীরের গুরুত্বপূর্ণ নানা টাবলিজম ও অন্যান্য শরীরবৃত্তীয় কার্যাবলি পরিপূর্ণরূপে সম্পাদানে ভূমিকা রাখে।
 
এছাড়া শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় যে ৯টি অ্যামাইনো অ্যাসিড খাদ্যের মাধ্যমে সরবরাহের প্রয়োজন, তার সবই রয়েছে শজনেপাতায়। প্রতি ১০ গ্রাম শজনেপাতায় ইউএসডিএ অনুযায়ী, ১৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম (ডেইলি ভ্যালু ১৫ শতাংশ), ২ মিলিগ্রাম আয়রন (ডেইলি ভ্যালু ১১ শতাংশ), ১৬০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম ও ৩ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে।
 
হাজার গুণে ভরপুর শজনেপাতা : শরীরের জন্য যেসব উপাদান প্রয়োজন, তার অধিকাংশই রয়েছে এই শজনেপাতায়। প্ল্যান্ট প্রোটিন ও আয়রনের উপস্থিতি অনেক বেশি পরিমাণ্যে বিদ্যমান এতে। ফলে শজনেপাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে রাখা হলেও এর পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে, নষ্ট হয় না। অনেকের শরীরেই ডায়াবেটিসের মতো কঠিন রোগ রয়েছে।

শজনেপাতা খাওয়ার ফলে শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর নিয়মিত এই পাতার গুঁড়া খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হয় এবং এটি ইমিউনিটি স্টিমুল্যান্ট হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি হজমক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী অবদান রাখে। অনেকেই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বেড়ে যাওয়া ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে চান।
 
তারা ব্যায়ামের পাশাপাশি শজনেপাতার গুঁড়া খাওয়ার ফলে উপকার মেলে। প্রতি এক টেবিল চামচ শজনেপাতার গুঁড়ায় ১৪ শতাংশ প্রোটিন, ৪০ শতাংশ ক্যালসিয়াম, ২০ শতাংশ আয়রন থাকে। আর ৬ টেবিল চামচ শজনেপাতার গুঁড়ায় একজন অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদায়ী নারীর প্রতিদিনের আয়রন ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ হয়।

শজনেপাতার গুঁড়ায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা যকৃৎ ও কিডনি সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। পাশাপাশি সৌন্দর্যবর্ধক হিসেবেও কাজ করে। এতে রয়েছে ৯০টিরও বেশি, ৪৬ রকমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও ৩৬টির মতো অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য। যা অকাল বার্ধক্যজনিত সমস্যা দূরসহ ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

         
          
        

 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ