ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনিয়ম-দুর্নীতি বাড়ার কারন গণতন্ত্র সংকট: আইনজ্ঞদের মত

বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় : ১৫-০৯-২০২৩ ০৬:১৬:৪২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৫-০৯-২০২৩ ০৬:১৬:৪২ অপরাহ্ন
অনিয়ম-দুর্নীতি বাড়ার কারন গণতন্ত্র সংকট: আইনজ্ঞদের মত ফাইল ছবি :
আলমগীর স্বপন:

বাংলাদেশে কতটা আছে গণতন্ত্র? আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে উঠলো এমন প্রশ্ন। এক্ষেত্রে বিশিষ্টজনরা ভোটাধিকার-মতপ্রকাশ ও নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

যদিও গণতন্ত্রের লড়াইয়ে বাংলাদেশের রয়েছে গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস। সেই লড়াইয়ের প্রতীক নূর হোসেনের বুকে পিঠে লেখা, 'গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক'। যে স্লোগানে কেঁপেছিল স্বৈরাচারের মসনদ। নব্বইয়ের গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে অর্জিত সেই গণতন্ত্র কতটা বাস্তবায়ন করা গেছে গত সাড়ে তিন দশকে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, গণতন্ত্রকে আমরা যেভাবে দেখতে চেয়েছিলাম, সেই অবস্থায় গণতন্ত্রকে আমরা পেয়েছি বলে দাবি করার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে, তা মনে হয় না। গণতন্ত্রে মূল কথা হতে হবে জবাবদিহিতা।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, সবকিছু মিলিয়ে গণতন্ত্রের অবস্থা খুবই নাজুক। নব্বইয়ের দশকটা আমার দৃষ্টিতে সবচেয়ে ভালো সময় ছিল। তারপর ২০০২-এ যখন বিনা বিচারে মানুষ মারা শুরু হলো, তখন থেকে গণতন্ত্রের অবস্থা খারাপ হতে থাকলো।

রাজনৈতিক দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চার অভাব, গণতান্ত্রিক সংকটের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন এই দুই জেষ্ঠ্য আইনজ্ঞ।

ড. মিজানুর রহমান বলেন, আমি যদি গণতান্ত্রিক নীতি প্রত্যাশা করি, তাহলে এটা প্রত্যাশিত যে দলের ভেতরেও এর চর্চা হবে।

ড. শাহদীন মালিক বললেন, এমন দলের নাম আমরা জানি, যেসব দলের প্রধান ২০-৩০-৪০ বছরে ধরে পদে রয়েছেন। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে, এর সঙ্গে দল অভ্যস্ত নন।

প্রতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পালন করা হয় আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস। ২০০৭ সালে জাতিসংঘ এ দিবস চালু করে। যে সময় বাংলাদেশে ছিল সেনা সমর্থিত অনির্বাচিত সরকার। সেই সরকারের অধীনে উৎসবমুখর ভোটে বিপুল বিজয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সেই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে পরপর দুইটি জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যখন আরেকটি নির্বাচন দোরগোড়ায়।

ড. শাহদীন মালিক বলেন, গতবার ভোট দেয়ার জন্য গৃহকর্মী তার এলাকায় (ঢাকার কাছে) যায়। পরদিন ফিরে এসে সে বলে, সকাল আটটার দিকে ভোট দিতে গেছে, তখন গিয়ে শুনে যে রাত ৪টা থেকে ভোট দেয়া শুরু হয়ে গেছে। সংবিধান অনুযায়ী ওইভাবে যদি নির্বাচন হয়, সত্যিকার অর্থে আমার মনে হয় না ২০ শতাংশ ভোটারও ভোট দিতে যাবে।

ড. মিজানুর রহমান বলেন, ভোটাধিকার প্রয়োগ করা মানুষের রাজনৈতিক-নাগরিক অধিকার। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়।

তবে শুধু ভোটাধিকার নয়, প্রকৃত রাজনীতিবিদের হাতে রাজনীতি কতটা আছে এ নিয়েও প্রশ্ন আছে বিশিষ্টজনদের।

ড. শাহদীন মালিক বলেন, এখন তো পুলিশ-আমলারাই বেশি ক্ষমতা প্রয়োগ করছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাজনীতিবিদরা তাদের আজ্ঞবহ হচ্ছেন। ব্যালেন্সটা চলে গেছে। গণতন্ত্রের জন্য আমরা যে প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা বলি, সংসদ ও বিচার বিভাগ— এগুলো ভেঙে পড়েছে।

জেষ্ঠ্য এ দুই আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞের মতে, গণতন্ত্রের সংকটের কারণে অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য, সেবাপ্রাপ্তিতে অনিয়ম, দুর্নীতিসহ নানাভাবে ভুগছে মানুষ। মত প্রকাশের স্বাধীনতাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
jamu/tv








 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ