ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ , ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর

বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় : ০২-১২-২০২৩ ০৫:৪৬:১৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০২-১২-২০২৩ ০৫:৪৭:০৩ অপরাহ্ন
পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর ফাইল ছবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩। টানা তিনদিনের ছুটিতে দেশ। ছুটি পেয়েই পর্যটকরা ছুটেছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পার্বত্য জেলা রাঙামাটির সাজেক ভ্যালীর উদ্দেশ্যে। একদিনে সেখানে গিয়েছেন সাড়ে ৩ হাজারের বেশি পর্যটক। কিন্তু এত পর্যটক থাকার ব্যবস্থাতো নেই সাজেকের হোটেলগুলোতে। ফলে তৈরি হয় চরম রুম সংকট। এ সময় পর্যটকদের পাশে দাঁড়ান সেখানকার স্থানীয়রা। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ঘরই হয়ে যায় পর্যকটকদের মেহমানখানা। বিনিময় হিসেবে অর্থ আয়ের পাশাপাশি তৈরি হয় এক মধুর সম্পর্কও। এমন ঘটনা যে শুধু এই দিনই ঘটেছে তেমন নয়। টানা ছুটি পড়লেই সাজেকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে পর্যটকরা। সেই সময় রুম সংকটের সুযোগে তৈরি এমন বহু সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক।

মূলত সড়ক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের পর বিগত দশকের শুরুতে সাজেকগামী হতে থাকে পর্যটকরা। এক পর্যায়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছে পাহাড়ের নয়নাভিরাম দৃশ্যে ভরা এই পর্যটন স্থান। পর্যটকরা শুধু যে পাহাড় দেখতেই সাজেকে যায় তেমন নয়, পাহাড়ে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষদের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি আদানপ্রদানও হয় এই পর্যটনের মাধ্যমে। তৈরি হয় উভয়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক। যা ভূমিকা রাখে পাহাড়ে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে।


তবে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে থাকা পাহাড়ের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে দেশের সমতল অংশের মানুষের এমন সম্পর্কের ইতিহাস খুব বেশি পুরোনো নয়। একসময় ছিল চরম বৈরী সম্পর্ক। পাহাড় ছিল অস্থির। যেখানে প্রতিনিয়ত চলতো খুনোখুনি। কথায় কথায় ঝরতো মানুষের প্রাণ। ফলে পাহাড় ছিল চরম আতঙ্কে ভরা এক জনপদ। শিক্ষা-সংস্কৃতিসহ কোনো ক্ষেত্রেই ছিল না উন্নয়নের ছোঁয়া। মৃত্যুপুরীর ভয়ে দিনের আলো নিভে গেলে স্তব্ধ হয়ে যেত পুরো পার্বত্য অঞ্চল। শুধু দিনে-রাতে মানুষের মৃত্যুই নয়, রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত ছিল পাহাড়ের মানুষগুলো। যার অবসান ঘটে ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত 'পার্বত্য শান্তি চুক্তি'র মাধ্যমে।

এই শান্তি চুক্তির মাধ্যমে সেই বছরের ২ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অস্ত্র সমর্পণ করে তৎকালীন সশস্ত্র গোষ্ঠী 'শান্তি বাহিনী'র সদস্যরা। আজ পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর পূর্ণ হচ্ছে। পার্বত্য শান্তি চুক্তির বিগত ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা কেমন বাংলাভিশনের পক্ষ থেকে জানতে চেয়েছিলাম স্থানীয় নাগরিক সমাজ এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের কাছে।

শিক্ষক ও লেখক শোভা রানী ত্রিপুরা। রাঙামাটিতে জন্মগ্রহণকারী এই নারী পাহাড়ে বসবাসকারী জাতিগোষ্ঠীদের নিয়ে অনেক বই লেখার পাশাপাশি ছোটগল্প, উপন্যাস ও নাটক রচনা করেছেন। মহলছড়ি চৌঙরাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক এই প্রধান শিক্ষিকা পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ত্রিপুরাদের নাগরিক প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিতি। আদর্শ নারী শিক্ষক হিসেবে তিনি ১৯৮৬, ১৯৮৬ ও ২০০০ সালে শ্রেষ্ট নারী শিক্ষক অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১৭ সালে বেগম রোকেয়া পদক অর্জন করেন।

পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ত্রিপুরাদের এই নাগরিক প্রতিনিধি বাংলাভিশনকে বলেন, এখন তো পাহাড়ে আতঙ্ক নেই। অনেক উন্নয়ন হয়েছে। প্রচুর মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে। রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন হয়েছে। পর্যটকরা আসছে, আমাদের লোকজনের আয়ও হচ্ছে। এখন রাতে রাঙামাটি থেকে রওনা দিয়ে সকালে ঢাকায় চলে যেতে পারি। আগে কোথাও যাওয়াতো দূরের কথা সন্ধ্যার পর মানুষ বেরই হতো না। একটা সময় ছিলো আমরা সবাই আতঙ্কে থাকতাম। এখন দুএকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া আতঙ্কের তেমন কিছুই নেই। এটা শান্তি চুক্তির কারণেই সম্ভব হয়েছে। এখন শুধু ভূমি নিয়ে কিছু সমস্যা আছে।


তিনি আরও বলেন, আমি সবসময় শান্তির পক্ষে। ক্ষুত্র নৃ-গোষ্ঠী বলেন, চামকা বলেন, মারমা বলেন বা বাঙালি বলেন আমরা চাই সবার মধ্যে শান্তি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও সেটাই চেয়েছেন। সংঘাত হলেতো সবারই কষ্ট। আমরা শান্তি চাই। এখন আমরা সেই শান্তিটাই পাচ্ছি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই শান্তিচুক্তিটি একটি মাইলফলক। একজন দেশপ্রেমিক সুনাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের এই অর্জন,21/tv

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ