বাংলাদেশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণ পোশাক রপ্তানি হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। যেখান থেকে রাজস্ব আয় করে সরকার। এবার বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা সেই পোশাকের মান নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এ বিষয়টি দেশের পোশাক খাতের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর গুলিস্তানে একটি বহুতল মার্কেটের ৬ষ্ঠ ও ৭তম তলায় বিভিন্ন দোকানে নানা ধরনের গার্মেন্টসের পোশাক দেখা যায়। যা দেশের বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে আনা হয়েছে। যেখানে ছোট-খাটো থেকে বহু পরিচিত সব ব্র্যান্ড রয়েছে।
মূলত রপ্তানির উদ্দেশে তৈরি কোনো পণ্যের অর্ডার বাতিল কিংবা ত্রুটিজনিত কারণে রপ্তানি সম্ভব না হলে তা কম দামে বিক্রি করা হয়। সেসব পোশাক কিনে নেন এসব দোকান মালিকরা। যা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। আর এই ব্যবসাকে প্রচলিত ভাষায় বলা হয় 'স্টক লট'।
খালেক মণ্ডল নামে একজন দোকানি বলেন, কারখানা থেকে এসব পোশাক আনার সময় গায়ে যে ব্র্যান্ডের নাম ও ট্যাগ দেখা যায় তা খুলে ফেলা হয়। যাতে কোম্পানির নাম বা পরিচিত বোঝা না যায়।
'স্টক লট'র নিয়ম অনুযায়ী তা কারখানার ভেতরেই ধ্বংস করার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। যার প্রমাণ দেশব্যাপী বিভিন্ন এলাকায় এভাবে পোশাকের সচরাচর ব্যবসা।
অভিযোগ রয়েছে, অর্ডার বাতিল হওয়া এমন পোশাকের কিছু অংশের মান ভালো, যা কেউ কেউ দেশের বাইরে রপ্তানি করছেন। আর বিশ্ববিখ্যাত সব ব্র্যান্ডগুলো যেটাকে বলছে নকল পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে। সম্প্রতি এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর ইউএসটিআর'র এক প্রতিবেদন থেকে বাংলাদেশ থেকে নকল তৈরি পোশাক রপ্তানির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। দেশটি বিভিন্ন গবেষণার বরাতে বলছে, বিশ্বব্যাপী নকল তৈরি পোশাক রপ্তানির মধ্যে শীর্ষ ৫টি উৎস দেশের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ।
ইউএসটিআর সংস্থার কাছে বাংলাদেশের নকল তৈরি পোশাক নিয়ে অভিযোগটি এনেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডগুলোর সংগঠন আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার এসোসিয়েশন (এএএফএ)। এ সংগঠনটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ক্রমশ নকল পণ্যের চালান বেড়েই চলছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের ১২টি দেশে নকল তৈরি পোশাক রপ্তানির চালান ধরা পড়েছে। আর বাংলাদেশ থেকে এসব পোশাক রপ্তানি ২০২২ সালে, আগের বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে সংগঠনটি নজরদারি তালিকার শীর্ষে বাংলাদেশকে রাখার জন্য সুপারিশ জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরকে।
এএএফএ সংগঠনটি বলছে, ২০২২ সালে মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনে এই দুটি দেশে ১৭টি অভিযানে ১ লাখ ৭৫ হাজার ধরনের নকল পণ্য জব্দ হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ পোশাকই বাংলাদেশে উৎপাদিত। এসব পণ্য প্রচলিত সমুদ্র পথে চালান না করে ছোট ছোট আকারে পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয়।
এদিকে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমই) জানিয়েছে, তাদের কোনো কারখানা থেকে নকল পণ্য রপ্তানি করা হয় না। বিজিএমইর দাবি, নকল তৈরি পোশাক রপ্তানির ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ দেখাতে পারেনি অভিযোগকারী সংস্থাগুলো।
বিজিএমইএ'র একজন পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, সপ্তাহখানেক আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর ইউএসটিআর পোশাক মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তারা নকল তৈরি পোশাক রপ্তানি নিয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। আর পোশাক মালিকরা কেন নকল পণ্য রপ্তানি করে নিজেদের সুনাম ও রপ্তানি বাজার নষ্ট করতে যাবে?
এছাড়া কারখানা থেকে 'স্টক লট' বের করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা একদমই অবৈধ। যেসব কারখানা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হয়ে কাজ করে তারা এমনটা নিয়মিত করে থাকে। যদি একটা অর্ডার বাতিল হয়ে যায় তখন তাদের অনুমতি নিয়ে ব্র্যান্ডের লেবেল ফেলে দিয়ে সেটা বাইরে বিক্রি করা যায়। এটা অবৈধ নয়। আর এখান থেকে হয়তো দু-একটা এ রকম হতে পারে, যেগুলো নিয়ম মেনে বাইরে যায়নি হয়তো।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া কেউ যদি স্থানীয়ভাবে নকল পন্য তৈরি করে তাহলে সেটার দায় অবশ্যই বিজিএমইএ'র নয়। কেননা, সেটি তো আমাদের সংগঠনের অধীনে নয়।
ফয়সাল সামাদ বলেন, নকল পোশাক রপ্তানির বিষয়টি যদি প্রমাণ হয়, তাহলে এটা পোশাক রপ্তানিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ বা সতর্কতা আরোপ করা যেতে পারে। এতে তৎপর হতে হবে সরকারকে।c/24
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর গুলিস্তানে একটি বহুতল মার্কেটের ৬ষ্ঠ ও ৭তম তলায় বিভিন্ন দোকানে নানা ধরনের গার্মেন্টসের পোশাক দেখা যায়। যা দেশের বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে আনা হয়েছে। যেখানে ছোট-খাটো থেকে বহু পরিচিত সব ব্র্যান্ড রয়েছে।
মূলত রপ্তানির উদ্দেশে তৈরি কোনো পণ্যের অর্ডার বাতিল কিংবা ত্রুটিজনিত কারণে রপ্তানি সম্ভব না হলে তা কম দামে বিক্রি করা হয়। সেসব পোশাক কিনে নেন এসব দোকান মালিকরা। যা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। আর এই ব্যবসাকে প্রচলিত ভাষায় বলা হয় 'স্টক লট'।
খালেক মণ্ডল নামে একজন দোকানি বলেন, কারখানা থেকে এসব পোশাক আনার সময় গায়ে যে ব্র্যান্ডের নাম ও ট্যাগ দেখা যায় তা খুলে ফেলা হয়। যাতে কোম্পানির নাম বা পরিচিত বোঝা না যায়।
'স্টক লট'র নিয়ম অনুযায়ী তা কারখানার ভেতরেই ধ্বংস করার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। যার প্রমাণ দেশব্যাপী বিভিন্ন এলাকায় এভাবে পোশাকের সচরাচর ব্যবসা।
অভিযোগ রয়েছে, অর্ডার বাতিল হওয়া এমন পোশাকের কিছু অংশের মান ভালো, যা কেউ কেউ দেশের বাইরে রপ্তানি করছেন। আর বিশ্ববিখ্যাত সব ব্র্যান্ডগুলো যেটাকে বলছে নকল পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে। সম্প্রতি এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর ইউএসটিআর'র এক প্রতিবেদন থেকে বাংলাদেশ থেকে নকল তৈরি পোশাক রপ্তানির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। দেশটি বিভিন্ন গবেষণার বরাতে বলছে, বিশ্বব্যাপী নকল তৈরি পোশাক রপ্তানির মধ্যে শীর্ষ ৫টি উৎস দেশের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ।
ইউএসটিআর সংস্থার কাছে বাংলাদেশের নকল তৈরি পোশাক নিয়ে অভিযোগটি এনেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডগুলোর সংগঠন আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার এসোসিয়েশন (এএএফএ)। এ সংগঠনটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ক্রমশ নকল পণ্যের চালান বেড়েই চলছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের ১২টি দেশে নকল তৈরি পোশাক রপ্তানির চালান ধরা পড়েছে। আর বাংলাদেশ থেকে এসব পোশাক রপ্তানি ২০২২ সালে, আগের বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে সংগঠনটি নজরদারি তালিকার শীর্ষে বাংলাদেশকে রাখার জন্য সুপারিশ জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরকে।
এএএফএ সংগঠনটি বলছে, ২০২২ সালে মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনে এই দুটি দেশে ১৭টি অভিযানে ১ লাখ ৭৫ হাজার ধরনের নকল পণ্য জব্দ হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ পোশাকই বাংলাদেশে উৎপাদিত। এসব পণ্য প্রচলিত সমুদ্র পথে চালান না করে ছোট ছোট আকারে পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয়।
এদিকে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমই) জানিয়েছে, তাদের কোনো কারখানা থেকে নকল পণ্য রপ্তানি করা হয় না। বিজিএমইর দাবি, নকল তৈরি পোশাক রপ্তানির ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ দেখাতে পারেনি অভিযোগকারী সংস্থাগুলো।
বিজিএমইএ'র একজন পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, সপ্তাহখানেক আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর ইউএসটিআর পোশাক মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তারা নকল তৈরি পোশাক রপ্তানি নিয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। আর পোশাক মালিকরা কেন নকল পণ্য রপ্তানি করে নিজেদের সুনাম ও রপ্তানি বাজার নষ্ট করতে যাবে?
এছাড়া কারখানা থেকে 'স্টক লট' বের করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা একদমই অবৈধ। যেসব কারখানা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হয়ে কাজ করে তারা এমনটা নিয়মিত করে থাকে। যদি একটা অর্ডার বাতিল হয়ে যায় তখন তাদের অনুমতি নিয়ে ব্র্যান্ডের লেবেল ফেলে দিয়ে সেটা বাইরে বিক্রি করা যায়। এটা অবৈধ নয়। আর এখান থেকে হয়তো দু-একটা এ রকম হতে পারে, যেগুলো নিয়ম মেনে বাইরে যায়নি হয়তো।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া কেউ যদি স্থানীয়ভাবে নকল পন্য তৈরি করে তাহলে সেটার দায় অবশ্যই বিজিএমইএ'র নয়। কেননা, সেটি তো আমাদের সংগঠনের অধীনে নয়।
ফয়সাল সামাদ বলেন, নকল পোশাক রপ্তানির বিষয়টি যদি প্রমাণ হয়, তাহলে এটা পোশাক রপ্তানিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ বা সতর্কতা আরোপ করা যেতে পারে। এতে তৎপর হতে হবে সরকারকে।c/24