দেশের গণতন্ত্র কাঠামো ফিরিয়ে আনার দাবিতে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। আজ শনিবার সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসের জোহা চত্বর থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেন তিনি। পরে দুপুর ১টা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে তিনি এ কর্মসূচি পালন করবেন।
জোহা চত্বরে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অংশ নেন পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল হক, ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন সংগঠনের রাজশাহীর সমন্বয়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী ও শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ আমান।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাতে সবাইকে পদযাত্রায় যোগদান করার আহ্বান জানিয়ে তিনি তার নিজস্ব ফেসবুক আইডির টাইমলাইনে লিখেন, 'আমাদের সংবিধান শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় শোভাযাত্রায় যোগদান করার অধিকার দিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে আসুন, গণতন্ত্র মেরামতের দাবিতে একটি নির্দলীয় নীরব পদযাত্রায় শামিল হই। গণতন্ত্রের জন্য, দেশের জন্য, দেশের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটু পথ হাঁটি। গণতন্ত্রের অন্ধকার দূর করতে দেশপ্রেমের একটু আলো ছড়ায়। মুক্তিযুদ্ধের মূল আকাঙ্ক্ষা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অংশ নিই। দেশের জন্য না হয় একটু কষ্ট, কিছু ঘাম, কিছু ক্লান্তি উৎসর্গ করি। অন্তত আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যেন আমাদের ভীরু, কাপুরুষ না ভাবে।'
তিনি আরও লিখেছেন, 'দেশে গণতন্ত্র কার্যত অন্ধকারে নিমজ্জিত, বিপন্ন। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ আজ চরমভাবে নিষ্পেষিত এবং উপেক্ষিত। বাকস্বাধীনতা নেই, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, মানুষ ভোটাধিকার বঞ্চিত হয়েছে এবং বিরোধী দল ও মতের প্রতি দমন-পীড়ন মাত্রা ছাড়িয়েছে। আমাদের এই নাজুক অবস্থার সুযোগে বিশ্বের বিভিন্ন পরাশক্তির তৎপরতা বেড়েছে, তারা বাংলাদেশকে নিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। দীর্ঘ মেয়াদে এটা দেশের জন্য মোটেও কল্যাণকর হবে না।'
পদযাত্রার কর্মসূচির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আজ সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসের জোহা চত্বর থেকে কর্মসূচিটি শুরু করেন। পরে নগরের সাহেব বাজার, সি অ্যান্ড বি মোড়, লক্ষ্মীপুর মোড়, ঘোষপাড়ার মোড়, মালোপাড়ার মোড়, নিউ মার্কেট হয়ে সাহেব বাজারে এসে শেষ করবেন।'
ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, 'আমরা এদেশের নাগরিক। আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান আকাঙ্ক্ষা ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। কিন্তু আজ নানা কারণে এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সচেতন ও শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে দেশের গণতন্ত্র ও দেশের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান রেখে আন্দোলনে নামা ও সোচ্চার হওয়া। কিন্তু দেশের শাসনতান্ত্রিক কাঠামো দিনে দিনে জটিল ও সহিংসতার দিকে যাচ্ছে। আমরা চাই না কোনো ধরণের সহিংসতা হোক। আমরা চাই দেশে একটি ভালো গণতান্ত্রিক কাঠামো ফিরে আসুক।'
তিনি আরও বলেন, 'পৃথিবীর বিভিন্ন রেটিং বলছে, দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হাইব্রিড ও ক্রুটিপূর্ণেরও নিচে। দেশের মিডিয়ার অবস্থাও খুব খারাপ। আমাদের দেশে ভোটাধিকার নেই। সাধারণ মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখে, তাদের ভোট হয়ে গেছে। তাহলে দেশে কীভাবে গণতন্ত্র থাকতে পারে?
মারুফ হোসেন মিশন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩