কাজী পেয়ারার উদ্ভাবক, সফল কৃষি সংগঠক এবং ন্যাশনাল ইমিরেটাস সাইন্টিস্ট ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মারা যান।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রখ্যাত এই কৃষি বিজ্ঞানীর মৃত্যুতে কৃষি ক্ষেত্রে দেশের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। তিনি তার সৃষ্টিশীল কর্মের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৯টায় ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে গাইবান্ধায় নিজ গ্রামে তাকে দাফন করা হবে।
১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন কাজী এম বদরুদ্দোজা। তার পৈতৃক নিবাস গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের অধীনে বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট (বর্তমানে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে পড়াশোনা করেন। তৎকালীন পাকিস্তান অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চ কাউন্সিলের পরিচালক, নির্বাহী পরিচালক ও মহাপরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে তিনি প্রথম দেশে উচ্চ ফলনশীল গম চাষের প্রবর্তনের উদ্যোগ নেন। ১৯৫৭ সালে তিনি ইকোনমিক বোটানিস্ট (ফাইবার) পদ লাভ করেন। তিনি পেয়ারার একটি বিশেষ জাত উদ্ভাবন করেন, যা তার নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে ‘কাজী পেয়ারা’।
ধানের বাইরে বাংলাদেশের প্রধান দুটি দানাদার ফসল গম ও ভুট্টা চাষ শুরুর ক্ষেত্রেও নেতৃত্ব দেন কাজী বদরুদ্দোজা। দেশে আধুনিক জাতের গম চাষ শুরু এবং ভুট্টার বাণিজ্যিক আবাদ তার হাত দিয়ে শুরু। ভুট্টা থেকে তেল উদ্ভাবন এবং তা পোলট্রি শিল্পের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার শুরুর ধারণাটিও তার। ছত্রাকের গণ ‘কাজিবোলেটাস’ এর নামকরণও করা তার নাম থেকে। কৃষিতে অবদানের জন্য ২০১২ সালে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ অর্জন করেন তিনি।