
এজহার পরিবর্তন করে জালিয়াতির মাধ্যমে জামিন নেয়ার ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (১৩ আগস্ট) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে জামিন নেয়ার ঘটনায় মৌলভীবাজারের বড়লেখায় রুবেল হত্যার মামলার আসামি বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার সাবুল আহমদকে গ্রেপ্তার করে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশ মোতাবেক তাকে হাজির করা হয়। তখন আদালত সংশ্লিষ্ট আইনজীবীসহ সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকে ডেকে নেন। পরে শুনানি শেষে বার সম্পাদককে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশ দিয়ে আসামি তার জিম্মায় দিয়ে দেন।
এদিকে আদেশের পর জালিয়াতির ঘটনা তদন্তে নেমেছে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি। তদন্তে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সমিতির সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল।
তিনি বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে জামিন নেয়ায় আসামিকে আদালত আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। একইসঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আইনজীবীসহ যারা রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বলেছেন। আমরা বার থেকে চার সদস্যের একটি কমিটি করে দিয়েছি, তারা তদন্ত করছেন, তদন্তে প্রতারণার বিষয়টি প্রমাণ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
এজহার পরিবর্তন করে জামিন নেয়ার ঘটনা আদালতের নজরে আসায় আদালত এ আদেশ দিয়েছেন।
মামলা থেকে জানা যায়, মসজিদের ইমামকে নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ২০২২ সালের ৮ এপ্রিল মৌলভীবাজার বড়লেখার সদর ইউনিয়নে রুবেল হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার সাবুল আহমদসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ মামলায় কেছরিগুল গ্রামের সাজ্জাদ আলীর ছেলে সাবুল আহমদ (৩৫) চলতি বছরের ১৩ জুলাই হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। ওই দিন হাইকোর্ট তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর এজহার টেম্বারিং করে গত ১ আগস্ট একই কোর্ট থেকে তিনি আগাম জামিন নিয়ে নেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ অফিসার বলেন, একই মামলায় ১ জুলাই তার জামিন আবেদন খারিজ হলো, তারপর গত ১ আগস্ট কিভাবে জামিন হয়। বিষয়টি আদালতের নজরে আসায় পরীক্ষা করে দেখা যায়, দ্বিতীয়বার জামিন আবেদনে এজহার টেম্পারিং করে তার নাম অজ্ঞাত দেখিয়ে জামিন চাওয়ায় আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন। পরে বিষয়টি আদালত খতিয়ে দেখে তার জামিন বাতিল করে তাকে গ্রেপ্তার করে হাজিরের নির্দেশ দেন।