ভারী বর্ষণ ও পাহাড় ধসে মা-মেয়েসহ কক্সবাজারে ৬ জনের মৃত্যু
কক্সবাজারের চকরিয়া, উখিয়া ও মহেশখালীতে একইদিনে ৬ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৭ আগস্ট) বিকাল ও দুপুরে পৃথক সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধস, বাড়ির মাটির দেয়াল চাপা, ঢলের পানিতে ভেসে এবং টমটম চার্জে দিতে গিয়ে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান জানান, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চকরিয়ার ১৮টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার শতাধিক গ্রামের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। মাতামুহুরী নদীতে তীব্র বেগে ঢল নেমেছে। ঢলের পানির সঙ্গে ভেসে আসা লাকড়ি ধরতে গিয়ে শাহা আলম (২৮) নামের এক পান ব্যবসায়ী নিখোজঁ হয়েছে। তিনি লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের হাজিপাড়ার মৃত জাকের হোছাইনের ছেলে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ইউএনও আরও বলেন, উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দুর্গম পূর্ব ভিলিজার পাড়ায় মাটির ঘরের দেয়াল ধসে দুই শিশুর মৃত্যু ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে অতিবর্ষণে রাস্তাঘাট তলিয়ে ওই পাড়ার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চেয়ারম্যান-মেম্বাররা বিস্তারিত তথ্য সংগহ করতে পারছেন না। তবে, দেয়াল ধসে শিশু মৃত্যুর খবর সঠিক বলে জানিয়েছেন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামান।
অপরদিকে টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৯ ব্লক ক-এ/৬ এর আনোয়ার ইসলামের স্ত্রী জান্নাত আরা (২৮) এবং তাদের মেয়ে মাহিম আক্তার (২)। ক্যাম্পে কর্মরত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, টানা বর্ষণে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পানবাজার পুলিশ ক্যাম্পের আওতাধীন এফডিএমএন ক্যাম্প-৯ এর এ/৬ ব্লকের পাহাড়ের পার্শ্বে আনোয়ার ইসলামের শেডের ওপর পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পানবাজার পুলিশ ক্যাম্পের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে অন্য রোহিঙ্গাদের সহায়তায় মাটিচাপা অবস্থায় জান্নাত আরা এবং শিশু মাহিমকে উদ্ধার করে।
উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, পাহাড় ধসে নিহত মা-মেয়ের সুরতহাল তৈরির পর বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়া মহেশখালীতে টমটম চার্জে দেওয়ার সময় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৭ আগস্ট) বেলা ১টার দিকে উপজেলার মহেশখালী পৌরসভার গোরকঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইয়াছিন মামুন (১৬) মহেশখালী পৌরসভার কলেজপাড়া এলাকার মুহাম্মদ রফিকের ছেলে এবং লিডারশীপ হাইস্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মামুনের বাবা পৌরসভার সুইপার হিসেবে কাজ করেন।
জানা গেছে, সংসারের খরচ যোগাতে পড়াশোনার পাশাপাশি টমটম চালাতো শিক্ষার্থী ইয়াছিন মামুন। দুপুরে টমটম গাড়িতে চার্জ দিতে গেলে সেখানেই বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তার মৃত্যু হয়।
মহেশখালী থানার ওসি (তদন্ত) তাজ উদ্দীন বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।সূত্র-ইত্তেফাক