একীভূত হওয়ার জন্য সরকারের শরণাপন্ন হয়েছিল আলোচিত পদ্মা ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তালিকায় 'রেড জোনে' থাকা এই ব্যাংকটিকে অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি এক্সিম ব্যাংক। দেশের ব্যাংক খাতে এটিই হবে প্রথম স্বেচ্ছায় একীভূতকরণের ঘটনা। এর আগে একীভূত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও স্বেচ্ছায় একীভূত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। এই পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনায় আছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তালিকায় রেড জোনে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত 'বেসিক ব্যাংক'- এর একীভূতকরণ প্রসঙ্গ। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে ব্যাংকটিকে রক্ষায় মন্ত্রণালয়কে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা গেছে, সরকারের উচ্চপর্যায়ের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংকে একীভূত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। দুই ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের যৌথ ব্যবসা থাকায় প্রথম এই ব্যাংক দুটিকে বেছে নেওয়া হয়। এই একীভূতকরণের উদ্যোগের ফলে আর্থিক বাজারে কোনও অস্থিরতা তৈরি না হলে আগামী দিনে অন্য দুর্বল ব্যাংকগুলোর বিষয়েও একই ধরনের সিদ্ধান্ত হবে।
বেসরকারি খাতের এই ব্যাংক দুটির মধ্যে আগামী সোমবার (১৮ মার্চ) একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর কয়েক বছরের মধ্যেই ঋণ অনিয়ম-জালিয়াতিতে ডুবে যায় পদ্মা তথা ফারমার্স ব্যাংক। ভোগান্তিতে পড়েন আমানতকারীরা। ২০১৮ সালে চারটি সরকারি ব্যাংক ও আইসিবি ব্যাংকটির বড় অংশ অধিগ্রহণের পর 'পদ্মা' নামে নতুন করে যাত্রা শুরু করলেও সুফল মেলেনি।
সবশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, 'দেশের ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে ৪০টির মতো ব্যাংক ভালো অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ৮ থেকে ১০টি ব্যাংক একীভূত হতে পারে।' এ জন্য ভালো ও দুর্বল ব্যাংকের এমডিদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরুর পরামর্শও দেন তিনি।
দুর্বল ব্যাংক একীভূত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক উদ্যোগের আগে একীভূত হওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা আরেকটি ব্যাংকের নাম বেসিক ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) একীভূত করার খসড়া পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তারপর আর কোনও অগ্রগতি নেই। তবে অর্থনীতিবিদদের অনেকেই বলছেন বেসিক ব্যাংককে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করলে ব্যাংকিং খাতের জন্য ভালো হতে পারে।
সম্প্রতি আলোচিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তালিকায় রেড জোনে থাকা পদ্মা ব্যাংকের মতো এই বেসিক ব্যাংকের পরিস্থিতিও নড়বড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এক সময়ের লাভজনক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক বর্তমানে গুরুতর আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। এমনকি ব্যাংকটি পরিচালন ব্যয় মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসিক ব্যাংকের কার্যক্রমের বর্তমান মডেলটি টেকসই নয়। প্রতিবেদনটি চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহর কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে ব্যাংকটিকে রক্ষা করার জন্য মন্ত্রণালয়কে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'পদ্মা ব্যাংককে একীভূত করে নেওয়ার সিদ্ধান্তটি ভালো হয়েছে। তবে পদ্মা ব্যাংকের রোগ যেন সংক্রমিত হয়ে এক্সিম ব্যাংকে গিয়ে না পড়ে।'
তিনি উল্লেখ করেন, 'এই ব্যাংকগুলোকে লাইসেন্স দেওয়ার সময়ই আমরা বলেছিলাম নতুন ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা নেই। তখন রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেক ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হয়। আবার নানা আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে অনেক সবল ব্যাংককে দুর্বল করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'শুধু সবল ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত নয়, যারা ব্যাংক দুর্বল করার জন্য দায়ী তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।'
বেসিক ব্যাংক প্রসঙ্গে প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'পদ্মা ব্যাংকের মতো বেসিক ব্যাংকও একীভূতকরণ করে উপকার পাওয়া যেতে পারে। তবে বেসিক ব্যাংককে কোনও ব্যাংকের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না।'
জানা গেছে, সরকারের উচ্চপর্যায়ের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংকে একীভূত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। দুই ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের যৌথ ব্যবসা থাকায় প্রথম এই ব্যাংক দুটিকে বেছে নেওয়া হয়। এই একীভূতকরণের উদ্যোগের ফলে আর্থিক বাজারে কোনও অস্থিরতা তৈরি না হলে আগামী দিনে অন্য দুর্বল ব্যাংকগুলোর বিষয়েও একই ধরনের সিদ্ধান্ত হবে।
বেসরকারি খাতের এই ব্যাংক দুটির মধ্যে আগামী সোমবার (১৮ মার্চ) একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর কয়েক বছরের মধ্যেই ঋণ অনিয়ম-জালিয়াতিতে ডুবে যায় পদ্মা তথা ফারমার্স ব্যাংক। ভোগান্তিতে পড়েন আমানতকারীরা। ২০১৮ সালে চারটি সরকারি ব্যাংক ও আইসিবি ব্যাংকটির বড় অংশ অধিগ্রহণের পর 'পদ্মা' নামে নতুন করে যাত্রা শুরু করলেও সুফল মেলেনি।
সবশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, 'দেশের ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে ৪০টির মতো ব্যাংক ভালো অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ৮ থেকে ১০টি ব্যাংক একীভূত হতে পারে।' এ জন্য ভালো ও দুর্বল ব্যাংকের এমডিদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরুর পরামর্শও দেন তিনি।
দুর্বল ব্যাংক একীভূত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক উদ্যোগের আগে একীভূত হওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা আরেকটি ব্যাংকের নাম বেসিক ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) একীভূত করার খসড়া পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তারপর আর কোনও অগ্রগতি নেই। তবে অর্থনীতিবিদদের অনেকেই বলছেন বেসিক ব্যাংককে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করলে ব্যাংকিং খাতের জন্য ভালো হতে পারে।
সম্প্রতি আলোচিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তালিকায় রেড জোনে থাকা পদ্মা ব্যাংকের মতো এই বেসিক ব্যাংকের পরিস্থিতিও নড়বড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এক সময়ের লাভজনক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক বর্তমানে গুরুতর আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। এমনকি ব্যাংকটি পরিচালন ব্যয় মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসিক ব্যাংকের কার্যক্রমের বর্তমান মডেলটি টেকসই নয়। প্রতিবেদনটি চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহর কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে ব্যাংকটিকে রক্ষা করার জন্য মন্ত্রণালয়কে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'পদ্মা ব্যাংককে একীভূত করে নেওয়ার সিদ্ধান্তটি ভালো হয়েছে। তবে পদ্মা ব্যাংকের রোগ যেন সংক্রমিত হয়ে এক্সিম ব্যাংকে গিয়ে না পড়ে।'
তিনি উল্লেখ করেন, 'এই ব্যাংকগুলোকে লাইসেন্স দেওয়ার সময়ই আমরা বলেছিলাম নতুন ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা নেই। তখন রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেক ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হয়। আবার নানা আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে অনেক সবল ব্যাংককে দুর্বল করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'শুধু সবল ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত নয়, যারা ব্যাংক দুর্বল করার জন্য দায়ী তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।'
বেসিক ব্যাংক প্রসঙ্গে প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'পদ্মা ব্যাংকের মতো বেসিক ব্যাংকও একীভূতকরণ করে উপকার পাওয়া যেতে পারে। তবে বেসিক ব্যাংককে কোনও ব্যাংকের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না।'