দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে জেলেরা ফিরছেন খালি হাতে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলেসহ মৎস্য সংশ্লিষ্টরা। অনেকেই নিচ্ছেন পেশা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত।
পটুয়াখালীর মৎস্য বন্দর মহিপুর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামের জেলে শাহ আলম জানান, গত ২৪ জুলাই রাতে ১৯ জেলেসহ এফবি হাছিনা নামের একটি ট্রলারে গভীর সাগরে মাছ শিকারে যান তারা। এক সপ্তাহ সাগরে জাল ফেলেও মেলেনি ইলিশ। পরে আবহাওয়া খারাপ হয়ে যাওয়ায় ঘাটে ফেরেন। তবে, যে পরিমাণ মাছ পেয়েছেন তাতে খরচই ওঠেনি।
শুধু জেলে শাহ আলম নয়। সাগর থেকে ফেরা বেশিরভাগ জেলে একই কথা জানান। তাদের দাবি, নিষেধাজ্ঞার সময় দেশের জলসীমায় অবাধে প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে গেছে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা।
জেলে শাহ আলম বলেন, সাগরে একবার জাল ফেলে তা আবার ট্রলারে তুলতে অনেক কষ্ট হয়। আমরা দিনে দুইবার জাল ফেলেছি। তারপরও মাছ মেলেনি। পরে আবহাওয়া অনেকটা খারাপ হয়ে গেলে ঘাটে ফিরে আসি। এখন সংসার চালাতে পারছি না। বর্তমানে ঋণে জর্জরিত হয়ে গেছি, তার উপর আবার আড়তদারের দাদন রয়েছে। এখন এই পেশা ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় দেখছি না।
একই এলাকার জেলে সামসু বেপারী ও আল-আমিন জানান, সাগরে মাছ নাই। নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের পাশের দেশের জেলেরা সব মাছ ধরে নিয়ে গেছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে দুইবার সাগরে গেছি। প্রতিবার খালি হাতে ফিরে এসেছি। আড়তদারের দাদন পরিশোধ হলে এ পেশা ছেড়ে অন্য কাজ করব।
কলাপাড়া মৎস্য অফিসের সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারীজ প্রজেক্টের সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈরি আবহাওয়ার কারণে সাগরে ইলিশ ধরা পড়ছে না। আবহাওয়া অনুকূলে এলে আশা করা যাচ্ছে জেলেরা ইলিশ পাবেন। জেলেদের সংকট নিরসনে কাজ করছে মৎস্য বিভাগ।