সারা দেশে জানুয়ারি মাসজুড়ে শীতের দাপট থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া ঘন কুয়াশা থাকতে পারে আগামী এক সপ্তাহ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বুধবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবান ও সিরাজগঞ্জে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, সীতাকুণ্ড, ঈশ্বরদী, সিরাজগঞ্জ, বান্দরবান ও শ্রীমঙ্গলে মৃদু শৈতপ্রবাহ চলছে। মধ্য রাত থেকে ঢাকা, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী বিভাগের কোনো কোনো এলাকায় হালকা থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেসময় তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তবে, দেশের সব অঞ্চলেই কুয়াশা রয়েছে।
এদিকে, খুলনা বিভাগে আকাশে মেঘ থাকায় কুয়াশা কিছুটা কম। যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, সেসব এলাকায় কুয়াশা কিছুটা কমবে। উত্তরপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বেগে শীতল হাওয়া বইছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, 'এ মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত কুয়াশা বিভিন্ন জায়গায় থাকবে। আর যেহতু আগামী কাল ও পরশু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে, যেসব অঞ্চলে বৃষ্টি হবে সেসব অঞ্চলে কুয়াশা কমে যাবে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে কুয়াশা থাকবে। আর পুরো জানুয়ারি মাসেই আমরা শীতের এ পরিস্থিতি দেখতে পাব।'
ঘন কুয়াশায় টানা ১২ দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না ঠাকুরগাঁওয়ে। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাচ্ছে না মানুষ।
দিনাজপুরে বেলা বাড়ার সাথে সাথে কমছে তাপমাত্রা, বাড়ছে কুয়াশাও। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে। কনকনে ঠান্ডা আর হিমেল বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। তীব্র শীতে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
মাঘের শুরুতেই রাজশাহী অঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। এতে জনজীবনে বিরুপ প্রভাবের পাশাপাশি ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে কৃষিতে। বিভাগের আট জেলাতেই তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ৮ থেকে ১২ ডিগ্রির মধ্যে। ভোরের ঘন কুয়াশা, সাথে ঠান্ডা হাওয়া, এক সপ্তাহের বেশি দেখা নেই সূর্যের। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জনজীবনে।
প্রকৃতির এই নিষ্ঠুরতায় বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বেড়িয়েও মিলছে না কাজ।
শুকুর আলী নামের এক শ্রমজীবী বলেন, 'বাসা থেকে ভোর চারটার সময় বের হয়েছি, কাজ এখনো পাওয়া যায়নি। কাজ খুব ঢিল। ঠান্ডার জন্য কাজে লোকজন নিচ্ছে না। খুব ঠান্ডা পড়ছে আজ ৮-৯ দিন বাসা থেকে বের হতে পারেনি আজ বের হয়েছি। চারিদিকে অনেক কুয়াশা কাজ নাই কাম নাই বয়স হয়ে গেছে কেউ নিচ্ছেও না। আমরা চলবো কিভাবে?' ম
শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ড নিবারণের চেষ্টা করছেন ছিন্নমূল মানুষরা। এদের একজন বলেন, 'সরকার কই দেয় আমার বয়স ৭০-৭৫ বছর হয়ে গেল এখনো কোনো ভাতা পাইনা। সরকারের কোন সাহায্য সহযোগিতা পাই না।'
বৈরি আবহাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে রবিশস্যসহ বোরো আবাদে। পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে কৃষকের লোকসান বাড়বে বলছে কৃষি বিভাগ।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, 'এমন আবহাওয়ায় বিশেষ করে আলুর ওপর একটি প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা কৃষকদের ব্যাপকভাবে সচেতন করছি। যারা বোরো ধান লাগিয়ে ফেলেছে তাদের ধানে একটু সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে যদি পানি কন্টিনিউ না করা যায়, পানি যদি নিয়মিত না দেওয়া যায় তাহলে চারা মারা যেতে পারে।'