চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাঙামাটিতেও এখন শোকের মাতম চলছে। সোমবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম থেকে অ্যাম্বুলেন্সে আনা হয় ফায়ার সার্ভিস সদস্য মিঠু দেওয়ান ও নিপন চাকমার দগ্ধ মরদেহ। রাঙামাটির এই দুই ছেলের এমন নিথর দেহ দেখে সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মানুষটিকে হারিয়ে কান্না যেন থামছে না স্বজনদের।
জানা গেছে, শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে নিহত হয় রাঙামাটি শহরের পশ্চিম ট্রাইবেল আদম এলাকার বাসিন্দা মিঠু দেওয়ান ও কলেজগেট মন্ত্রী পাড়ার বাসিন্দা নিপন চাকমা। একদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে থাকার পর সোমবার তাদের মরদেহ নিয়ে আসা হয় রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ে। সেখানে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান ও জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. রফিক। এরপর তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
রাঙামাটি জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. রফিক জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত দুই পরিবারকে ২০ হাজার করে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। আমরা আমাদের সহকর্মীদের এভাবে হারাবো কখনো ভাবিনি। ডিপোতে রাসায়নিক পদার্থের বিষয়টি আগে থেকে অবগত করা হলে হয়তো হারাতে হতো না এতগুলো প্রাণ।
পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে মিঠু ও নিপনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাদের স্ব স্ব বাসভবনে। এসময় লাশ দেখে শোকের মাতম শুরু হয় তাদের পরিবারে। ছুটে আসে আশপাশের প্রতিবেশী ও স্বজনরা। কান্না যেন থামছে না নিপনের মায়ের। সন্তানকে হারিয়ে অনেকটা পাগল। বাকরুদ্ধ তাদের সহধর্মিণীরাও।
নিপনের সহধর্মিণী সুমনা দেওয়ান বলেন, আমাদের মাত্র দুইটি কন্যা সন্তান। একজনের বয়স ৮ বছর। অন্যজনের ১৩ বছর। তাদের বাবা অগ্নিযুদ্ধে চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। এখন আমি কিভাবে দু’কন্যাকে নিয়ে পরিবার সামলাবো। সরকারের কাছে আমার অনুরোধ যাতে আমার মেয়েরা ভালভাবে অন্তত পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে, সে ব্যবস্থা করেন।
এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন নিপনের বড় মেয়ে রিমি। সে চিৎকার করে বলে উঠে বাবা নেই আমাদের এখন কে দেখবে? আমার তো কোনো বড় ভাইও নেই। কিভাবে মা আমাদের ভরণপোষণ করবে?
সূত্র- বিডি প্রতিদিন
ডেস্ক রিপোর্ট/জান্নাত